নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁও উপজেলার সোনারগাঁও সরকারি কলেজ সংলগ্ন ব্রীজ থেকে শম্ভুপুরা ইউনিয়নের দড়িগাঁও পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার সড়কের কার্পেটিং-এর সংস্কার কাজ ফেলে ঠিকাদার উধাও হয়ে গেছে। প্রায় চৌদ্দ মাস সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় জনদুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করছে। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
সোনারগাঁও উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চৌদ্দ মাস আগে গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সংস্কারের জন্য কার্যাদেশ পেয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ডলি কনস্ট্রাকশন সড়কটির উভয় পাশে মাটি খুঁড়ে গর্ত করে এবং পুরাতন কার্পেটিং তুলে বেহাল অবস্থায় রেখে কাজ বন্ধ করে চলে যায়। এতে করে রাস্তার খানাখন্দে বৃষ্টির পানি আটকে পথচারী ও যানবাহন চলাচলে মারাত্মক ব্যাহত হচ্ছে।
উপজেলার মোগরাপাড়া, পিরোজপুর ও শম্ভুপুরা ইউনিয়ন সহ বন্দর উপজেলা ও মুন্সীগঞ্জ জেলার একাংশের হাজার হাজার মানুষের চলাচলের সড়ক এটি।
উল্লেখ যে,সোনারগাঁও সরকারি কলেজ সংলগ্ন ব্রীজ থেকে শম্ভুপুরা ইউনিয়নের দড়িগাঁও পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার সড়কে সংস্কার কাজের কার্পেটিংয়ের জন্য বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে টেন্ডার আহবান করা হয়। এ সড়কের কাজের ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় সাড়ে ৭ কোটি টাকা। অন্যদিকে উপজেলার বারদী থেকে নয়াগাঁও হয়ে তালতলা পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার সড়ক (একই প্রকল্পের) সংস্কারের কাজের ব্যয়ও ধরা হয়েছে সাড়ে ৭ কোটি টাকা। একটি প্যাকেজে দুটি কাজই ডলি কনসন্ট্রাকশন নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান টেন্ডারের মাধ্যমে কার্যাদেশ পায়। কিন্তু দুটি কাজই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পুরোপুরিভাবে শুরু না করার ফলে চলাচলে জনসাধারণ অসুবিধায় পড়ে।
এদিকে শম্ভুপুরা ইউনিয়নের সড়কটির সংস্কার কাজ অনেক দেরিতে শুরু করে। চুক্তি মোতাবেক দুই বছরের মধ্যে সম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন করার কথা। কিন্তু ১ বছর ৪ মাস অতিবাহিত হলেও মাত্র পাঁচ শতাংশ কাজ হয়েছে । টেন্ডার নির্দেশনা মতে সম্পূর্ণ কাজ না করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানটি সড়কের পাশে কিছু গর্ত ও সমস্ত সড়কের কার্পেটিং তুলে খোঁড়াখুঁড়ি করে বাকী কাজ অসমাপ্ত রেখে চলে যাওয়ার ফলে এখন এই ভাঙাচোরা রাস্তায় জনসাধারণের চলাচলে ভোগান্তিও আরো বেড়ে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা,সোনারগাঁও উপজেলা একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শেখ এনামূল হক বিদ্যুৎ জানান, এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন দুটি জেলার হাজার হাজার মানুষ যাতায়াত করে। কিন্তু জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অবহেলায় জনগণের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। ডলি কনস্ট্রাকশনকে সড়কটি দ্রুত সংস্কার শেষ করার জন্য বারবার তাগিদ দিলেও তাদের কোন কর্ণপাত হচ্ছে না। এ নিয়ে স্থানীয় জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে।
গত চৌদ্দ মাসে সড়কটি ভেঙ্গে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। বৃদ্ধা থেকে শুরু করে গর্ভবতী নারীরা জরুরী চিকিৎসা সেবা নিতে পারছে না।
তাই দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কটির সংস্কার কাজ শেষ করা জরুরি।
না হয় নতুন টেন্ডারের মাধ্যমে অন্য কোন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে সংস্কার কাজ শেষ করার জন্য নতুন করে কার্যাদেশ দেয়া হোক।
এদিকে ডলি কনস্ট্রাকশনের প্রকল্প পরিচালক মিতুর সাথে মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও তাকে পাওয়া যায়নি।