ঐতিহাসিক ২৩ জুন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭২তম জন্মদিনে শম্ভুপুরা ইউনিয়নের আওয়ামী লীগ ও সহযোগি সংগঠনের সকল নেতা-কর্মী এবং সর্বস্তরের সকল শ্রেণীর মানুষকে নিয়ে প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর সফলতা ও স্বার্থকতা কামনা করেন ।
পীর মোহাম্মদ এর সঞ্চালনায় এ সময় উপস্থিত ছিলেন মাসুম চৌধুরি সহ-সভাপতি সোনারগাঁও উপজেলা যুবলীগ। উপস্থিত ছিলেন শেখ এনামুল হক বিদ্যুৎ সভাপতি সোনারগাঁ ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, কাইয়ুম মিয়া সভাপতি সোনারগাঁ উপজেলা মাৎস্য লীগ, শম্ভুপুরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা হাজী মোতালিব ,নিজাম উদ্দিন প্রধান, আনসার মেম্বার, রোকন মোল্লা,মজিদ মোল্লা,রিপন মেম্বার পদপ্রার্থী ২নংওয়ার্ড, ছাত্রলীগ নেতা পারভেজ আহমেদ ,শুভ,পলাশ,ফাহিম, হাবীব, মুন্না, প্রমুখ।
এ সময় নেতাকর্মীরা কেক কেটে দোয়া মাহফিল শেষে তবারক বিতরণ করেন সীমিত পরিসরে দূরত্ব বজায় রেখে
এক বার্তায় বলেন, ১৯৪৯ সালের এই দিনে পুরনো ঢাকার ঐতিহ্যবাহী রোজ গার্ডেনে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে এই রাজনৈতিক দলটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের অবসান এবং ভ্রান্ত দ্বি-জাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা। অতঃপর বাঙালি জাতির উপর পশ্চিম পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর অত্যাচার, নির্যাতন, চরম অবেহলা ও দুঃশাসনে নিষ্পেষিত বাংলার জনগণের মুক্তি ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রতিষ্ঠিত হয় আওয়ামী লীগ।
জন্মলগ্নে এই সংগঠনের নাম ছিল পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ। ১৯৪৯ সালের ২৩ ও ২৪ জুন ঢাকার কেএম দাস লেনে অবস্থিত ঐতিহাসিক রোজ গার্ডেন প্রাঙ্গণে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর অনুসারি মুসলিম লীগের প্রগতিশীল কর্মীদের নিয়ে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে ‘পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ’ নামে পাকিস্তানের প্রথম বিরোধী দলের আত্মপ্রকাশ ঘটে। সংগঠনটির প্রথম কমিটিতে মওলানা ভাসানী সভাপতি ও শামসুল হক সাধারণ সম্পাদক এবং জেলে থাকা অবস্থায় যুগ্ম-সম্পাদক নির্বাচিত হন শেখ মুজিবুর রহমান।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ধর্মনিরপেক্ষ-অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি, বাঙালি জাতীয়তাবাদ, গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি, শোষণমুক্ত সাম্যের সমাজ নির্মাণের আদর্শ এবং একটি উন্নত সমৃদ্ধ আধুনিক, প্রগতিশীল সমাজ ও রাষ্ট্রব্যবস্থা বিনির্মাণের রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক দর্শনের ভিত্তি রচনা করে আওয়ামী লীগ। যার পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৫৫ সালের কাউন্সিলে অসাম্প্রদায়িক নীতি গ্রহণের মাধ্যমে সংগঠনটির নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী লীগ।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ শুধু এ দেশের প্রাচীন ও সর্ববৃহৎ রাজনৈতিক সংগঠনই নয়, বাংলাদেশের রাজনীতির মূলধারাও। স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইতিহাস একসূত্রে গাঁথা। ১৯৪৮ সালে বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে সূচিত ভাষা আন্দোলন ১৯৫২ সালে গণজাগরণে পরিণত হয়। অব্যাহত রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার তরুণ সংগ্রামী নেতা শেখ মুজিবুর রহমান সেই সময়ে কারান্তরালে থেকেও ভাষা আন্দোলনে প্রেরণাদাতার গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা পালন করেন।
ভাষা আন্দোলনের বিজয়ের পটভূমিতে ১৯৫৪ সালে প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন যুক্তফ্রন্টের কাছে মুসলিম লীগের শোচনীয় পরাজয় হয়। তারপরও প্রাসাদ ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব থেকে দূরে রাখা হয়। নানা ঘটনা প্রবাহের মধ্য দিয়ে ১৯৫৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে প্রদেশে প্রদেশে কোয়ালিশন মন্ত্রিসভা গঠিত হয়। পূর্ব বাংলায় আওয়ামী লীগ সরকার নিশ্চিত করে এক মুক্ত গণতান্ত্রিক পরিবেশ।
আইয়ুব খানের এক দশকের স্বৈরশাসন-বিরোধী আন্দোলন,৬২ ও ৬৪-এর শিক্ষা আন্দোলন,৬৪-এর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা প্রতিরোধ,৬৬-এর ঐতিহাসিক ৬-দফা আন্দোলন,৬৮-এর আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা, ৬৯-এর গণ-অভ্যুত্থান, ৬-দফাভিত্তিক ৭০-এর নির্বাচনে ঐতিহাসিক বিজয়, ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধুর এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম খ্যাত কালজয়ী ভাষণ ও পরবর্তীতে পাকিস্তানি শাসকদের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন, ২৫ শে মার্চের কালরাতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী কর্তৃক ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যার পর ২৬ শে মার্চের প্রথম প্রহরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বাঙালি জাতি স্বাধীন জাতি-রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। অবশেষে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দীর্ঘ ৯ মাসের এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ৩০ লাখ শহীদের রক্ত আর ২ লাখ মা-বোনের ইজ্জতের বিনিময়ে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের।
মানুষের অধিকার আদায়ে সব সময় কাজ করে যাচ্ছে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হাতে গড়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের হাত ধরে,ভিশন ২০২১ ও উন্নয়ন রূপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ একটি উন্নত ও অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশ হিসেবে জায়গা করে নিবে এটাই প্রত্যাশা।
সংগ্রাম ঐতিহ্য ও সাফল্যের আওয়ামী লীগের ৭২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সফল হউক।
শুভ জন্মদিন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।